জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ২০ অক্টোবরকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে এ দিন সরকারি ছুটি থাকায় এক দিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান জানান, ২০ অক্টোবর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি বিধায় আজ ১৯ অক্টোবর বৃস্পতিবার ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৩ ও ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে সকাল ৯ টায় ৩০ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা হবে। তারপর, ৯টা ৪০ মিনিট বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু মুরালে ৯ টায় ৫০ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ম্যুরাল -এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস উপলক্ষে সকাল ১০ টায় আনন্দ র্যালী জবি ক্যাম্পাস থেকে রায়সাহেব বাজার দিয়ে ভিক্টোরিয়া অতিক্রম করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে। আনন্দ র্যালীর থেকে ফিরে ১০ টায় ৪৫ মিনিটে ভাষা শহীদ রফিক ভবন এর নিচ তলা প্রকাশনা উৎসব-এর উদ্বোধন করা হবে। এরপর ১১ টায় নতুন একাডেমিক ভবনের নিচে তলায় বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হবে।
ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মিলনয়াতনে ১১ টায় ১৫ মিনিট থেকে ১২টা পর্যন্ত নাটক (নকশী কাঁথার মাঠ) পরিবেশনা করা হবে। পর্যায়ক্রমে, মুজিব মঞ্চে ১২টা থেকে ৫ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জবির সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের (ব্যান্ডদল) অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।
পাঠশালা হিসেবে যাত্রা শুরু করা এই বিদ্যাপীঠ সময়ের পালাবদলে অর্জনে সমৃদ্ধ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করছে ধারাবাহিকভাবে৷ বিশ্ববিদ্যালয়টি পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার আওয়ায় আনার প্রচেষ্টা চলছে।
কেরাণীগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস৷ ইতিমধ্যেই লেক খননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ অধিগ্রহণ করা হয়েছে ২০০ একর জমি। দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছে৷ গতবছর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীদের আসন বন্টনের মধ্য দিয়ে অনাবাসিক তকমা ঘুচেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের। ডীনস অ্যাওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি ইংরেজি বিভাগে চালু করা হয়েছে চেয়ারম্যান’স অ্যাওয়ার্ড।

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৭১ জন শিক্ষক, ১৭ হাজার ৫২৭ জন শিক্ষার্থী ও ৭৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। বর্তমানে ১৫৬জন অধ্যাপক কর্মরত আছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ এর মধ্যে গ্রেড-১ পদে ৩৬জন,গ্রেড-২ পদে ৪৬জন এবং গ্রেড-৩ পদে ৭৪জন অধ্যাপক আছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ পূর্ব-পশ্চিম বিডিকে বলেন, অবকাঠামোর সুযোগ সুবিধা ছাড়াই আমাদের শিক্ষার্থীরা সফল হচ্ছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যত্ন নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ সকল সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছি।
আপনার মতামত দিন