গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট-২০২২ প্রকাশ করেছে ইউনেসকো। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়ের ৭১ শতাংশই বহন করতে হয় পরিবারকে। এনজিও বা বেসরকারি স্কুলের ফি ও ব্যয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় তিনগুণ। বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনের ক্ষেত্রে এ ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় নয়গুণ।’ তবে ইউনেসকোর এ প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত নন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সারাদেশে ২০ হাজার বেসরকারি স্কুল-কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত। বাকি প্রায় ২ হাজার ননএমপিও প্রতিষ্ঠান। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ৮০ শতাংশ খরচ (বেতন-ভাতা ও অন্যান্য) সরকারিভাবে অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। এর বাইরে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি-উপবৃত্তি, বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়ে থাকে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৯ সালে আমরা সবাইকে স্কুলে আনার প্রতি জোর দিয়েছিলাম। ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষার মানের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কোন স্তরে কী ধরনের মান হওয়া প্রয়োজন তা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। তার আলোকে নতুন কারিকুলাম তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছর থেকে সেটি কার্যকর করা হচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের সব ক্লাসে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। করোনায় অনেক শিশুর মধ্যে মানসিক আঘাত তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় শিশুদের মানসিক সুস্থতায় সারাদেশের দুই লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
বিগত ১২ বছর ধরে শিক্ষা আইন ঘোরাফেরা করলেও সেটি চূড়ান্ত হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিপরিষদ থেকে সংশোধন দিয়ে আমাদের কাছে পাঠালেও সেটি করে আমরা আবারও পাঠিয়ে দেই। নতুন করে আবারও কিছু সংশোধন করতে পাঠানো হয়েছে। সেটি করে ফের পাঠানো হবে। আমাদের শেখার পদ্ধতিতে ভুল আছে বলেই ১২ বছর ইংরেজি পড়লেও শিক্ষার্থীরা তা সঠিকভাবে শিখতে পারছে না। এ অবস্থায় পড়ানোর পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ বলেন, ইউনেসকোর গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্টে শিক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টি উঠে এসেছে। অর্থনৈতিক সক্ষমতার কারণে শিক্ষার চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও মানের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সবার কাছে শিক্ষার সমান সুযোগ তৈরি করতে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে সরকারের।
আপনার মতামত দিন