বলছিলাম যশোরের মুক্তিযোদ্ধা কলেজের মিনা ও তহমিনার কথা। দুজনই জন্মগত ভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। কিন্তু তাদের অদম্য মনেবলের কাছে সব হার মেনেছে। দুজনেই মেধাবী।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা। পরীক্ষার হলে একজন এলেন মায়ের কোলে চড়ে। আরেকজন মায়ের কাধে চড়ে।
জন্মগত ভাবে মিনার দু,পায়ে সমস্যা। তহমিনার মেরুদন্ডের তিনটি হাড় নেই। যশোর মুক্তিযোদ্ধা কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী তারা।
ঘন্টা বাজতেই মিনা হামাগুড়ি দিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন। তহমিনাকেও তার সহপাঠীরা ঘাড়ে ভর করে পরীক্ষার আসনে বসিয়ে দেন।
যশোর মুক্তিযোদ্ধা কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী তারা। ঘন্টা বাজতেই মিনা হামাগুড়ি দিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেন। তহমিনাকেও তার সহপাঠীরা ঘাড়ে ভর করে পরীক্ষার আসনে বসিয়ে দেন।
মিনার বাবা একজন ডাব বিক্রেতা। ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করে মিনার পড়ালেখা এবং সংসারের খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। তহমিনার বাবা কৃষি কাজ করে। দুজনেরই স্বপ্ন বড় হয়ে বিচারক হবেন। মিনা বলেন, আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী, হাটাচলা করতে পারি না।
হামাগুড়ি দিয়েই সব কাজ সারি। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই, ভবিষ্যতে মাজিস্ট্রেট বা বিচারক হতে চাই। কলেজের অধ্যক্ষ দুজনকেই অনেক সহোযোগিতা করেছেন। আমাদের বোর্ড ফিস, যাতায়াত খরচ তিনিই বহন করছেন।’ তহমিনা বলেন, ‘ মাজায় মেরুদণ্ডের তিনটি হাড় নেই। তবুও হার মানতে চাই না। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। আমি শিক্ষা জীবন শেষে ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারক হতে চাই।’ মিনার মা আছিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী একজন ডাব বিক্রেতা। আমরা সংগ্রাম করে সন্তানকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। বিশ্বাস করি আমাদের মেয়ে প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও একদিন তার স্বপ্ন পূরণ হবে।’
তহমিনার মা রেখা পারভিন বলেন, মেয়ের মাজায় হাড় নেই। তিনবার অপারেশন করিয়ে এখন মোটামুটি ও দাঁড়াতে পারে। শিক্ষক ও আমরা তাদের ভালো ফল প্রত্যাশা করি।
যশোর মুক্তিযোদ্ধা কলেজের অধ্যক্ষ ড. গৌর চন্দ্র মিস্ত্রী বলেন, মিনা ও তহমিনা আমার কলেজের ছাত্রী। দুজনেই মেধাবী। তাদের সর্বাত্বক সহযোগিতা করে এসেছি। দৃঢ় বিশ্বাস এবারও তারা ভালো ফলাফল করবে। পরিক্ষা কেন্দ্রে দুই শিক্ষার্থীকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময়সহ বোর্ড কর্তৃক সকল সুযোগ—সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা যশোর কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা। প্রতিবন্ধী দুই সহপাঠী মিনা ও তহমিনা সংগ্রামের পথ জয় করে স্বপ্নের দারপ্রান্তে পৌছাবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
আপনার মতামত দিন