সতীর্থ বিজ্ঞানী, বিশেষ করে নারী বিজ্ঞানীদের জন্য সব সময় তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। শিশুদের বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে তার চেষ্টা নিরন্তর। কথাগুলো বলা হয়েছে বাংলাদেশি অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহাকে নিয়ে। তার প্রতিভা ও কাজের সুখ্যাতি সর্বত্র। এবার বিশ্বের খ্যাতনামা বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট বিশ্বের ১০ বিজ্ঞানীর প্রোফাইল প্রকাশ করেছে। সেখানে আছেন সেঁজুতি সাহা। তাকে নিয়ে ল্যানসেট–এর লেখাতেই উঠে এসেছে কথাগুলো।
সেঁজুতির সহযোগী, কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির মহামারি ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মধুকর পাই বলেছেন, ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে নারী বিজ্ঞানীদের এক অসাধারণ রোল মডেল সেঁজুতি। অসাম্য ও অন্যায্যতার বিষয়েও তিনি উচ্চকণ্ঠ।’
সেঁজুতি সাহা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালক। ল্যানসেট তার সম্পর্কে বলেছে, ‘তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণা নিয়ে সমতার পক্ষে এক জোরদার কণ্ঠ। সেঁজুতি এবং সিএইচআরএফে তাঁর দল মিলে জীবাণুর জিন নকশা উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) কিংবা ভাইরাসের গবেষণায় রত থাকেন। বাংলাদেশের শিশুদের আক্রান্ত করে এমন কিছু রোগ, যেমন ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া নিয়ে তাঁদের গবেষণা অব্যাহত আছে।’
ল্যানসেট–এ প্রোফাইল প্রকাশের পর সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘যখন ল্যানসেট আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে, আমি অবাক হয়েছিলাম যে ল্যানসেট আমাদের কাজ সম্পর্কে এতটা জানে! আমি খুব গর্বিত বোধ করছি যে ল্যানসেট–এর মতো একটি জার্নাল একজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীকে নিয়ে একটি প্রোফাইল লিখেছে। এটি বিশ্বের কাছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।’
বিজ্ঞানের জন্য, আরও বিশদে বলতে গেলে মানুষের কল্যাণের জন্য বিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে বিজ্ঞানমনস্ক একটি পরিবেশ তৈরি করা দরকার। দরকার বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার। আর এসবের শুরুটা হওয়া দরকার স্কুল পর্যায়ে। আর শিশুদের বিজ্ঞানের দিকে টানতে চাই বিশেষ উদ্যোগ। সেঁজুতির কাজ শুধু শিশুদের রোগ থেকে রক্ষা নয়, শিশুদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলার জন্যও তিনি ছুটে বেড়ান দেশময়। তাঁর কাজ দেখে শিশুদের বাবা-মায়েরাও আপ্লুত হয়ে তাঁকে চিঠি লিখেছেন। এমন এক চিঠি সেঁজুতিকে নিয়ে ল্যানসেট–এর লেখায় উঠে এসেছে। যেখানে অভিভাবকেরা লিখেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা বিজ্ঞানী হোক, এটা চাই। আমরা কখনো ভাবিনি, এটা একটা পেশা হতে পারে। কারণ, আমরা কোনো দিন বিজ্ঞানী দেখিনি। সত্যি বলতে কি, কোনো নারী বিজ্ঞানী দেখিনি।’
আপনার মতামত দিন