ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবির) কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সারজানা আক্তার। তবে এ সাফল্য পাওয়ার পথটা মোটেও সহজ ছিল না তার। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন মাকে হারান। পড়ালেখার খরচ জোগাড় করতে পারছিলেন না বর্গাচাষি বাবা। মেধাবৃত্তির টাকায় পড়াশোনা চলেছে।
জানা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় মায়ের মৃত্যু হয়। বর্গাচাষি বাবা পড়ালেখার খরচ জোগাড় করতে পারছিলেন না। মেধাবৃত্তির টাকায় পড়াশোনা চলেছে তাঁর। পরিবারের অভাবের মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সারজানা আক্তার।
সারজানার বাড়ি সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছেন। এর আগে সীতাকুণ্ড বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পান।
গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সারজানাদের আধা পাকা ঘরের ওপর টিনের চালে জং ধরেছে। বৃষ্টির পানি যাতে ঘরের ভেতরে না পড়ে, সে জন্য টিনের চালের বিভিন্ন অংশ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
সারজানা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেন তিনি। সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আইন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছা তাঁর।
সারজানা আরও বলেন, অভাবের মধ্যেও বাবা তাঁকে সব সময় পড়ালেখায় উৎসাহিত করেছেন। তাঁর শিক্ষক হিমেল শর্মা ও রবিউল হোসেন তাঁকে টাকা ছাড়াই প্রাইভেট পড়িয়েছেন।
প্যাসিফিক জিন্স ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তি পেয়েছিলেন সারজানা। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তির টাকায় লেখাপড়ার খরচ মিটিয়েছেন। তাদের আধা পাকা ঘরের ওপর টিনের চালে জং ধরেছে। ঘরের ভেতরে যাতে পানি না পড়ে, সে জন্য টিনের চালে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা।
সারজানা আক্তার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি করে ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেন তিনি। সব ক’টিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। আইন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তিনি। বলেন, অভাবের মধ্যেও বাবা পড়ালেখায় উৎসাহিত করেছেন। তাঁর শিক্ষক হিমেল শর্মা ও রবিউল হোসেন টাকা ছাড়াই প্রাইভেট পড়িয়েছেন তাকে।
আপনার মতামত দিন